What are hormonal foods

হরমোন জাতীয় খাবার কি কি? হরমোনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য উপকারী ৫  খাবার। 

বর্তমান সময়ে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা  অতীব জরুরি। কাজের চাপ থেকে শুরু করে মানসিক স্ট্রেস থেকে বাড়তে পারে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।গবেষণায় জানা যায় শরীরের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার সাথে হরমোনের সম্পর্ক ওতপ্রোতোভাবে জড়িয়ে আছে। বিশেষ করে নারীদের হরমোনের বিষয়টি নজরে রাখতে হবে কারন নারীদের জন্য হরমোন মূল ভূমিকা পালন করে। নারীদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে হরমোনকে ব্যালেন্সে রাখতে হবে। এছাড়া নারীদের হরমোন ঠিক রাখতে সহায়তা প্রদান করবে আপনার সঠিক জীবনযাপন ও হরমোন জাতীয় খাবার  খাওয়ার অভ্যাস করা।তাছাড়া অতিরিক্ত চিন্তা ও কারন হতে পারে হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার অন্যতম একটি উদাহরণ। পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোন এর জন্য শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়।ফলস্বরূপ  দেখা দেয়  বৈবাহিক সম্পর্ক কাল হয়ে দাঁড়ায়। তাই পুরুষ বা নারী উভয়ই হরমোনকে সমতায় এনে জীবনযাপন করতে হবে। হরমোন জাতীয় খাবারের ভূমিকা সম্পর্কে বিশদ জানতে হবে। 

যে উপদেশ মেনে চললে আপনি পেতে পারেন সুস্থ স্বাভাবিক  জীবনঃ

  • সকালবেলায় ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। একান্তই যদি ফল খাওয়ার অভ্যাস না থাকে তাহলে স্নেহ জাতীয় খাবার অর্থাৎ ঘি,নারিকেল তেল সহ চর্বি জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করুন।
  • নারীদেহে ঋতুচক্রে হরমোনের পরিবর্তন আসা শুরু করে। দেখা যায়, ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরনের ক্ষরণ বাড়া শুরু করে। তখন তিসি, কুৃমড়ার বীজসহ তিল হতে পারে অত্যন্ত কার্যকর একটি উপায়!
  • তাছাড়া ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পূর্বে আপনার শরীরে ইপিএ ও ডিএইচএ এর মতো উপাদান কতটুকু আছে তা চিকিৎসকের মাধ্যমে জেনে তারপর খাবেন। কারন এতে নাহয় আপনার শরীরে আরো খারাপ প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে।

হরমোনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য উপকারী ৫  খাবারঃ

১. বীজজাতীয় খাবারঃ

বীজজাতীয়  খাবারের মধ্যে অন্যতম রয়েছে তিল বীজ।যার মধ্যে পাবেন ক্যালসিয়াম, আয়রন সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। তিলে রয়েছে প্রচুর ফাইবার যা আমাদের দেহের জন্য মূলত হরমোন ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর।সূর্যমুখী বীজে রয়েছে সেলেনিয়াম সহ ভিটামিন ই এর মতো উপাদান যা আমাদের প্রজেস্টেরন হরমোন বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া কুমড়ো বীজে রয়েছে ওমেগা সহ জিংক ও ম্যাগনেশিয়াম যা হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এবার একটি প্রশ্ন মাথায় আসতে পারে, শুধু বীজ না খেলে উপকার পাবো?

হ্যাঁ,আপনি বীজের সাথে অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে নিলেও পুষ্টি উপাদান কমে যাবে না। অনেকে শুধু খালি বীজ খাওয়ার অভ্যাস না থাকতে পারে এক্ষেত্রে আপনি তিলের বীজ চাটনি কিংবা সবজিতে দিতে পারেন।সূর্যমুখী বীজ দইয়ের সাথে মিক্স করে খেতে পারেন এবং কুমড়ো বীজ ভাজা মুখরোচক খাবার হিসাবে খেয়ে নিতে পারেন। জেনে নেয়া জরুরি, কুমড়োর বীজ সচরাচর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ বড় ভূমিকা পালন করে। 

২. অ্যাভোকাডোঃ

অ্যাভোকাডো হলো সুপারফুড যার মধ্যে রয়েছে ফাইবার সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভৃতি। অ্যাভোকাডো শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফল যা কর্টিসল হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তথাপি দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য খুব ভালো কাজ করে।তাই অ্যাভোকাডো সালাদ হিসাবে ও আপনি আপনার খাবার তালিকায় রাখতে পারেন।

৩. ব্রকলিঃ

ব্রকলিতে রয়েছে সালফোরাফেন নামক যৌগ যা শরীরে অ্যান্টি ইনফ্লেমটরির মতো ভূমিকা পালন করে অর্থাৎ প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তাই ব্রকলির মতো সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন পাশাপাশি পালংশাক সহ সব ধরনের সবুজ শাকসবজি খাওয়ার ফলে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেন। ব্রকলি প্রধানত ইস্ট্রোজেন হরমোনক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। নারীদের মুড পরিবর্তন সহ ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্রকলি খুবই ভালো কাজ করে। 

৪. হলুদঃ

হলুদে রয়েছে আয়ুর্বেদি চিকিৎসা সহ কারকিউমিন নামক পদার্থ যা শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সহ প্রদাহ রোধ করতে পারে। হলুদ শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে পাশাপাশি দেহের উপর অতিরিক্ত চাপ ও কনট্রোল করতে পারে।

৫. প্রোটিনজাতীয় খাবারঃ

খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন মাছ মাংস সহ ডিম ও দুধে পাবেন প্রচুর পরিমানে পুষ্টি উপাদান। যদি মাছ মাংস না খেতে পারেন তাহলে ডাল ও বাদামে রয়েছে হাই প্রোটিনের উৎস যা শরীরের জন্য হরমোন নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর। 

তাছাড়া আপনি চাইলে হার্বাল বা গ্রিন টি এর সাহায্যে ও হরমোন ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেন।এর জন্য অবশ্যই সঠিক নিয়মকানুন জানা জরুরি। 

পরিশেষে বলা যায় – হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখা কিছু কিছু ফ্যাক্টরের উপর নির্ভরশীল।কিছুসময় দেখা যায় পারিপার্শ্বিক কারনে আপনার হরমোনের মাত্রা কমে বা বেড়ে যায় এবং তার জন্য শরীরে প্রভাব পড়ে থাকে। ধরুন, আপনার পেটে সমস্যার সাথে আপনার শরীর ও দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই মূহুর্তে আপনার হরমোন এর মাত্রা ও পরিবর্তন আসবে।তাছাড়া আপনার মানসিক অবস্থা খারাপ থাকলে শরীরের জটিল সমস্যা শুরু হয় তথাপি হরমোন আপ-ডাউন শুরু হতে থাকে। সুতরাং কর্টিসল হরমোন মানসিক দুশ্চিন্তার জন্য দায়ী হরমোন তাই এই হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করতে আপনি অ্যাভোকাডো খেতে পারেন। এছাড়া মেয়েদের প্রজেস্টেরন ও ছেলেদের টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরণে সহায়তা করে এরকম খাবার খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখতে পারেন। এতে আপনি হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখার পাশাপাশি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন  পাবেন।