আমরা সবাই কমবেশি স্টেরয়েড নামটির সাথে পরিচিত। কিন্তু কেন আমরা স্টেরয়েড নিচ্ছি অথবা এটা পরবর্তী সময়ে কিভাবে আমাদের শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে এটা অনেকেই জানা নেই। শরীর বৃদ্ধি বা গড়নের জন্য স্টেরয়েড যেমন প্রয়োজন তেমনি  এর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার জানা জরুরি।স্টেরয়েড বলতে আমরা কর্টিকোস্টেরয়েড বা অ্যানাবলিক স্টেরয়েড কে কমবেশি চিনি। শরীরের জটিল জটিল কার্যক্রম বা একটি নির্দিষ্ট  অংশকে লক্ষ্য করে কৃত্রিমভাবে তৈরি ঔষধই হলো স্টেরয়েড বর্তমানে যা নারীদের বন্ধ্যাত্বে হুমকিস্বরূপ।

স্টেরয়েড কি?

স্টেরয়েড হলো  কৃত্রিমভাবে তৈরি  রাসায়নিক বস্তু যা মানবদেহে উৎপাদিত পদার্থের মতো কাজ করে। স্টেরয়েডের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্দিষ্ট অনুপাতে শরীরের বিভিন্ন অংশে কাজ করা। তবে এই হরমোন যৌনতায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

স্টেরয়েডের প্রকার-

কর্টিকোস্টেরয়েড কে সাধারণত স্টেরয়েডের প্রধান অংশ বলা হয়। এটি শরীরের কোন অংশের প্রদাহ বা ফোলাভাব কমাতে ব্যবহার করা হয়। প্রায়ই ডাক্তারের কাছে গেলে আমরা স্টেরয়েডাল ঔষধ প্রেসক্রাইব করতে দেখা যায় তার মধ্যে  কর্টিসোন, হাইড্রোকর্টিসোন, প্রেডনিসোন সহ রয়েছে প্রেডনিসোলন।এবার অ্যানাবলিক স্টেরয়েড নিয়ে কথা বলা যাক। এই স্টেরয়েড সাধারণত পেশি বিল্ডারের ন্যায় কাজ করতে পারে। শরীরের হরমোনের ভারসাম্য ও ঘাটতি নির্মুল করার উপায় হিসেবে অ্যানাবলিক স্টেরয়েড দীর্ঘদিন ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।

স্টেরয়েড খেলে কি সমস্যা হয়?

স্টেরয়েড আমাদের যৌনতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিতে পারে। নিম্নে কিছু সাধারন বিষয়বস্তু তুলে ধরা হলো:

১.হরমোনের ভারসাম্যতা: হরমোনোর ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য আমরা অ্যানাবলিক স্টেরয়েড খেয়ে থাকি। তবে দীর্ঘদিন এভাবে স্টেরয়েড গ্রহণের ফলে পুরুষ হরমোন এবং নারীর হরমোনে কিছু পরিবর্তন চলে আসতে পারে।

২. বন্ধ্যাত্ব: বন্ধ্যাত্ব  বলতে নারী বন্ধ্যাত্ব বোঝানো হয়ে থাকে।বর্তমান সময়ে মানুষের অসচেতনতা ও বেশি বেশি ঔষধ সেবনের ফলে জটিল জটিল সমস্যা শরীরে বাসা বাঁধে।

৩. পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: স্টেরয়েড খেলে নারীদের শরীরে ইনডিভিজুয়াল সাইড ইফেক্ট দেখা দিতে পারে।

●            শরীরে ওজন বৃদ্ধি

●            শরীরে লোম গজানো

●            ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া

●            মুখের ফোলা ভাব

●            চোখের দৃষ্টি

●            অ্যালার্জিক সমস্যা

●            হাইপ্রেশার

●            অস্টিওপরোসিস

●            পেটে সংক্রমন

●            চুল পড়া

●            মুখের লোম বৃদ্ধি

●            মাসিক চক্র পরিবর্তন হওয়া

স্টেরয়েড গ্রহণে বন্ধ্যাত্ব স্থায়ী বা অস্থায়ী হয়?

অ্যানাবলিক স্টেরয়েড খেলে নারীদের বা পুরুষের শরীরের হরনোনজনিত প্রভাব পড়ে। গবেষকরা বলেছেন শরীরে AAS গ্রহনের তিন মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে বেসলাইন মূল লাইন থেকে সামান্য কম ফিরে আসে। তারপর মেডিসিনসহ  শরীরের গঠন, হরমোনাল প্রয়োগের ক্ষেত্রে এটি স্থায়ী রূপে চলে যেতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব হওয়ার কারন-

নির্দিষ্ট কোন অ্যানাবলিক স্টেরয়েড নারীদের উর্বতার জন্য ব্যবহার করা হয় না। সাধারনত টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির জন্য প্রাথমিকভাবে  পুরুষরা ব্যবহার করেন কিন্তু নারীদের শরীরের জটিল সমস্যার জন্য  এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চিন্তা করে নিষিদ্ধ বিবেচনা করে।

তাছাড়া সমস্যা দেখা দিতে পারে –

●            নারীদের কন্ঠ ভারী হওয়া

●            ব্রেস্ট পরিবর্তন হওয়া

●            ক্লিটোরিস বড় হওয়া

এই ধরনের সমস্যাগুলো সহজে পরিবর্তন করা যায় না। তাছাড়া রয়েছে ওভুলেশন ডিসঅর্ডার, ফ্যালোপিয়ান টিউব ড্যামেজ বা ব্লক হওয়া, ইউটেরিন ডিজেজ ইত্যাদি কয়েকজন এর জটিল জটিল রোগ ও সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় –

●            লিভার ডেমেজ- অতিরিক্ত মেডিসিন নেয়ার ফলে লিভারে ইনফ্লামেশন হতে পারে।

●            কার্ডিওভাসকুলার ডিজেজ- হার্ট অ্যাটাক।

●            মুড সুইং

কিভাবে প্রতিরোধ করা যাবে?

সবশেষে বলা যায় – স্টেরয়েড খেলে নারীদের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি বেড়ে যায় তবে এর কার্যক্রম প্রতিহত করার জন্য আমাদের গর্ভবতী নারীদের আরো সচেতন হয়ে উঠতে হবে। বন্ধ্যাত্ব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন আলোচনা মূলক সভার মাধ্যমে গ্রামীন সমাজের নারীরের উপলব্ধি বাড়াতে হবে।

বন্ধ্যাত্ব বিষয়ক যে কোনো পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসক Dr. MD Rafiqul Islam Bhuiyan স্যার এর সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *