DR. MD RAFIQUL
ISLAM BHUIYAN

বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময়।

বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত : সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময়।

বিয়ের মাধ্যমে দুটি পরিবারের মেলবন্ধন ঘটে এবং দুটি দেহ এক প্রান হয়ে চলার সংকল্পে আবদ্ধ হয়। সাধারনত বিয়ের পর পর নববিবাহিত দম্পতির মাথায় যে জিনিসটি কাজ করে তা হলো শারিরিক মিলনে কোন পদ্ধতি গ্রহন করবে।

  • বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত ?
  •  প্রকৃতপক্ষে বিয়ের পরে সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময় কখন? 

এরকম নানাবিধ প্রশ্ন মাথায় ঘোরপাক খাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিয়ে যেমন দুটি মানুষকে একটি বন্ধনে আবদ্ধ করে তেমনি সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে এই বন্ধন দৃঢ় থেকে সুদৃঢ় হয়।

আজকের আলোচনা মুলত যারা নতুন বিয়ে করেছেন বা বিয়ে করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য। যারা সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন অথবা জানতে চান বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত ।

শারিরিক মিলনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভাবেই একজন মেয়ে গর্ভধারন করে থাকে। স্বামী এবং স্ত্রীর সম্মিলিত প্রচেষ্টা সন্তান ধারনের পুর্বশর্ত।

 দীর্ঘদিন চেষ্টার পরও যদি আপনার বচ্চা না হয় তাহলে আপনি IVF Specialist – Dr MD Rafiqul Islam Bhuiyan সাথে যোগাযোগ করতে পারেন

বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত

১। বিচেবনায় আনতে হবে বয়সঃ 

সন্তান গ্রহনের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপুর্ন বিষয় হলো বয়স। নতুন দম্পতির প্রথম সন্তান গ্রহনের জন্য বয়সকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় আনতে হবে। নারীদের ক্ষেত্রে বয়স বেশি হলে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা যেমন হ্রাস পায় তেমনি বয়স একেবারে কম থাকলে মা ও সন্তান উভয়ই ঝুকিতে থাকে। বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত এ প্রশ্নে অনেকে নানান রকম মতামত দিলেও সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময় নির্বাচনের ক্ষেত্রে সকল বিশেষজ্ঞই বয়সের ‍উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

একটা সময় পর্যন্ত মনে আমাদের এই সমাজে ধরেই নেওয়া হত, মেয়েদের ২০ বছরের মধ্যেই প্রথমবার সন্তানধারণ করা উচিত। কিন্তু সময় বদলাচ্ছে। আধুনিকায়নের এই যুগে বর্তমানে চিকিৎসকরা মনে করছেন, ২০ বছর নয়, বরং আরও একটু দেরি করে মা হওয়াই নিরাপদ। সেটা যেমন মায়ের জন্য ভালো, তেমনই সন্তানের জন্যও নিরাপদ।

তবে এটিও আবার বিবেচনা করতে হবে যে, খুব বেশি দেরি না করাই মঙ্গল। কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের জননক্ষমতা কমে যেতে থাকে এবং গর্ভকালীন নানা জটিলতার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাই চেষ্টা থাকা উচিত, যাতে ৩০ পার হওয়ার আগেই অন্তত প্রথমবার গর্ভধারণ করা যায়। মেয়েদের জরায়ুতে ডিম্বানুর পরিমান বয়স বাড়ার সাথে সাথে কমতে থাকে। পুরুষদের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যাতিক্রম হলেও বয়সের প্রভাব গুরুত্বপুর্ন।

সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ৩০ পেরিয়ে গেলে একজন নারীর প্রজনন ক্ষমতা ৫০ শতাংশ কমে যায় এবং বয়স ৩৫ অতিক্রম করলে এই হার কমে যায় আরও ৩০ শতাংশ। তবে একটি সন্তান জন্ম নেওয়ার পরে এই ঝুঁকি কমে যায়।

চিকিৎসকদের বক্তব্য, ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই মেয়েদের প্রথমবার মা হওয়ার জন্য আদর্শ সময়। আগে বা পরে হলেই বিপদের ভয়। দেরি করে সন্তান নিলে, চর্বি জমে ফ্যালোপাইন টিউব বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। দীর্ঘমেয়াদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিটি ব্যবহারের ফলে প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়।

২। বিবেচনা করতে হবে পারিবারিক কোন সদস্যের বন্ধ্যাত্বের হিস্ট্রিঃ 

পারিবারিক অসুস্থতা এবং ইতিহাস নারী বা পুরুষ উভয়ের সন্তান গ্রহনের জন্য অতিব গুরুত্বপুর্ন। পারিবারের কোন সদস্যের যদি বন্ধাত্ব থেকে থাকে বা পুর্বে বন্ধাত্ব ছিল এমন হিস্ট্রি থাকে তবে বিয়ের পর পরই সন্তান গ্রহনের চেষ্টা করা উচিৎ। সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময় বিবেচনায় পরিবারে কোন সদস্যের বন্ধ্যাত্ব হিস্ট্রি গুরুত্বপুর্ন।

ফ্যামিলিতে বন্ধ্যত্ব আছে কি না, মা বা বোনের এন্ডোমেট্রিওসিস আছে কি না—এ রকম যদি হিস্ট্রিতে থাকে, তার সন্তান গ্রহনে গ্যাপ না নেওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

৩। ক্যারিয়ারের সাথে সমন্বয়ঃ 

অনেক সময় আমরা ক্যারিয়ারের কথা বলে অনেক গুরুত্বপুর্ন কাজ এড়িয়ে যাই। আমাদের বুঝতে হবে, বিয়ে – সন্তান এসব ও ক্যারিয়ারের ই একটা অংশ। তবে বিবেচনায় অবশ্যই রাখতে হবে সময়। হয়তো আপনার (মেয়েদের ক্ষেত্রে আগামী এক বছরের মধ্যে অর্থ্যাৎ (১০-১২) মাসের মধ্যে বড় কোন পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে হবে বা অন্য কিছু আছে যেটাতে পুর্ন মনোনিবেশ করতে হবে, তখন সন্তান গ্রহনের ক্ষেত্রে এটি অবশ্য বিবেচনায় আনতে হবে। ক্যারিয়ারের জন্য ভাল প্লানিং করে সন্তান নেওয়া যেতে পারে। বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত এ বিষয়ে ক্যারিয়ার বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

৪। ব্যক্তিগত বোঝাপড়া ও আলোচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহনঃ

জীবন সম্পুর্নটাই ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার বিষয়। পরিবারে স্বামী স্ত্রী মিলে বোঝাপড়ার মাধ্যমে সন্তান গ্রহনের বিষয়ে একমত হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে। যদি দুজনের দুই রকম চিন্তা থাকে তবে সন্তান গ্রহনে এর প্রভাব পরবে। অনেক সময় দেখা যায়, স্ত্রী চাচ্ছে দ্রুত সন্তান নিতে কিন্তু স্বামী আরো সময় চায় সেক্ষেত্রে দুজন আলোচনা করে সমাধানে আসা উচিৎ। তা না হলে কোন ভাবে গর্ভবতী হয়ে গেলে সংসারে দুজন দুজনের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারেন। আবার অনেক সময় স্বামী চায় দ্রুত সন্তান কিন্তু পারিপার্শিক কারনে স্ত্রী চায়না। এসব সমস্যা সামনে আসলে দুজন মিলে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। মনে রাখতে হবে বর্তমানে আধুনিক যুগে জীবন কোন বাংলা সিনেমা নয় যে, হঠাৎ একদিন স্ত্রী কানে কানে এসে বলবে তুমি বাবা হতে চলেছো আর স্বামী আকাশ থেকে পড়বে । এখানে উভয়েরই এ বিষয়ে ধারনা থাকা দরকার। সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময় বিবেচনায় ব্যাক্তিগত আলোচনা ও বোঝাপড়া অতিব গুরুত্বপুর্ন।

৫। চিকিৎসকের পরামর্শঃ 

সন্তান গ্রহনের ক্ষেত্রে বিয়ের পর সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময় কখন এটা নিয়ে অনেকেই নানান কনফিউশনে ভুগে থাকেন। প্রতিটি কাজে যেমন সঠিক সময় আছে তেমনি সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময় হলো বিয়ের পর চেষ্টা করা এবং টানা ৬ মাস চেষ্টা করার পরেও যদি কোন সফলাতা না আসে তখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করা।

এছাড়াও সন্তান গ্রহনের উপযুক্ত সময় কখন বা বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত এসব বিষয়ে যথাযথ ভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

আপনার একটি ভুল সিদ্ধান্ত, আপনার পারিবারিক জীবনকে করতেপারে বিভীষিকাময়। আবার আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে পরিবার বা সমাজের জন্য মঙ্গলজনক। 

আপনার বন্ধ্যাত্ব সমস্যা নিয়ে আমাদের সাথে কথা বলুন