কোন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যতীত এক বছর পর ও যদি কোন বিবাহিত দম্পতি সন্তান জন্মদানে অপারগ হোন তাকে বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। এক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ উভয়েই সম্মিলিতভাবে দোষী হিসাবে বিবেচনা করা দরকার । কিন্তু নারীকে সমাজে কলুষিত করা হয় এবং কিছু সময়ে তাদের অভিশাপ রূপে গণ্য করা হয়। তবে একজন পুরুষের মধ্যে ও বন্ধ্যাত্ব বিরাজমান থাকতে পারে তথাপি তার শুক্রাণু কমবেশি হওয়া বা যৌনাঙ্গে সমস্যা হতে পারে। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা রয়েছে কিভাবে বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নারী পুরুষের বন্ধ্যাত্ব তাদের বৈবাহিক সম্পর্ককে নষ্ট করে দেয় এবং সমাজের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করে।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ ও চিকিৎসা
শুক্তানু সংখ্যা কমে যাওয়া
পুরুষের দেহে সাধারণত দেড় কোটির কম শুক্রাণু থাকা মানে হলো তার গর্ভধারণ ঝুঁকিপূর্ণ। শুক্রাণুর সংখ্যা সহ তার আকৃতি চেঞ্জ হওয়া বা গতিশীলতা কমে যাওয়া হলো বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারন।
পারিপার্শ্বিক অবস্থা
মানসিক স্ট্রেস সহ ক্লান্তি আপনার দেহে অবসাদজনিত সমস্যা তৈরি করে। তাই অতিরিক্ত চিন্তা করলে তা
ফার্টিলিটিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
লাইফস্টাইল ধরন
খাবারের ধরন,রুচি বা আপনার শারীরিক কন্ডিশন অনেক সময় আপনার যৌন স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।তাছাড়া অতিরিক্ত ওজন সহ ডায়াবেটিস উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ।
আধুনিক চিকিৎসাঃ
১.পুরুষের দেহে শুক্রাণু যদি দশ মিলিনের কম থাকে তাহলে তার জন্য আইভিএফ এর চিকিৎসা দেয়া হয়। যখন শুক্রাণুর পরিমাণ আরো কমে যায় অর্থাৎ ৫ মিলিয়ন হয়ে যায় তখন টেস্টটিউব চিকিৎসা নেয়া হয়।
২. শুক্রাণুর নালী আটকে গেলে সার্জারি করার প্রয়োজন হতে পারে।
৩. যদি একান্তই বীর্যে কোন শুক্রাণু উপস্থিত না থাকে এর জন্য কোন চিকিৎসা বর্তমানে নেই।
নারী বন্ধ্যাতের কারণ ও চিকিৎসা
নারী বন্ধ্যাত্ব নিয়ে সাধারণত আন্দাজ করা হয় যখন একজন নারী ৩৫ দিন বা তার বেশিদিন ধরে মাসিক অনিয়মিত হওয়াকে বোঝানো হয়।তাছাড়া ৩৫ বছরের বয়সী কোন মহিলা যখন প্রথম এক বছরের মধ্যে সন্তান গর্ভধারণে ব্যর্থ হোন তাকে প্রাথমিক বন্ধ্যাত্ব হিসাবে নামকরণ করা হয়। বিভিন্ন কারনে নারীর বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
ডিম্বস্ফোটন সমস্যা
ডিম্বস্ফোটন সমস্যা থেকে ডিম্বাশয়ে সমস্যা তৈরি হয়।তাই এই সমস্যা যদি কারো হয় তাহলে তার অতিদ্রুত ডাক্তারের কাছে যোগাযোগ করা উচিত।
প্রোলাকটিন হরমোন বেড়ে যাওয়া
অনেক সময় হরমোন বেড়ে যাওয়ায় শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। পিটুইটারি গ্রন্থির এই হরমোন বেড়ে গেলে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়। তাই ফলপ্রসূ নারীর বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ফ্যালোপিয়ান টিউব ক্ষতি
ফ্যালোপিয়ান টিউবে সমস্যা হলে শুক্রাণু জরায়ুতে প্রবেশে বাঁধা পায়।এর ফলে যোনিপথে আসতে পারে না এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়।
এন্ডোমেট্রিওসিস
এন্ডোমেট্রিওসিস হলো প্রদাহজনিত সমস্যা যার কারনে নারীদের শরীরে শুক্রাণুর প্রবেশ আটকে যায়। যখন টিস্যু বেড়ে যায় এবং যেখানে বাড়ার কথা সেখানে না বেড়ে অন্য জায়গায় বৃদ্ধি পায় তখন জরায়ুর মুখে বাঁধা সৃষ্টি হয়।
আধুনিক চিকিৎসাঃ
- আইভিএফ
- ICSI
- গেমেট ইন্ট্রাফ্যালোপিয়ান ট্রান্সফার
- জাইগোট ইন্ট্রাফ্যালোপিয়ান ট্রান্সফার
- অ্যান্টিমুলেরিয়ান হরমোন পরীক্ষা করা
- ইমেজিং এন্ড ব্লাড টেস্ট
আপনার বয়স অনুযায়ী চিকিৎসক আলাদা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।যখন আপনার বয়স ৩৫ এর মধ্যে হবে তখন আপনাকে এক বছর বাচ্চা জন্মদানের চেষ্টা করতে বলা হবে।যখন ৪০ পার হয়ে যাবে তখন সার্জারি বা আধুনিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
মেডিসিন – মহিলাদের ডিম্বস্ফোটন সমস্যার জন্য কিছু ঔষধ রয়েছে যার জন্য আপনি চিকিৎসা নিতে পারবেন।গাইনি বিশেষজ্ঞ কারো সাথে পরামর্শ করে আপনি ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনে খেতে পারবেন।
সার্জারি – এন্ডোমেট্রিওসিস বা সিস্ট জনিত প্রদাহের জন্য আপনি ছোটখাটো সার্জারি করার প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে ইমেজিং টেস্ট সহ যাবতীয় পরীক্ষা করে সার্জনের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনবোধে অপারেশন করাতে পারবেন।
উপসংহার
নারী ও পুরুষ উভয়ের সমস্যার জন্য চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। পুরুষের যৌন উদ্দীপনা কম হওয়া বা শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়া যেমন সমস্যা তেমনি নারীর অনিয়মিত মাসিক বা জরায়ু নালী ব্লক হওয়া ও গুরুতর সমস্যা। কোন বিষয়কে উপেক্ষা করার জুড়ি নেই। প্রায় ১৫ শতাংশ দম্পতি বিয়ের পর এই সমস্যায় থাকেন এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সুখকর হয় না।এজন্য নতুন দম্পতি এক বছর সময় নিয়ে চেষ্টা করতে পারেন এবং আপনার কি কি কারনে সমস্যা হতে পারে তার জন্য কাউন্সিলিং এর সাহায্য নিতে পারেন।আর যাদের বয়স বেশি বেড়ে গেছে আপনারা চিকিৎসার শরণাপন্ন হতে পারেন।বিজ্ঞানের আলোকে বর্তমানে অনেক আধুনিক চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসা নিলেই আপনি সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখতে পারবেন।
বাংলাদেশে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
বাংলাদেশে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক নামী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইউনাইটেড হাসপাতাল, শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ এর মত জায়গাগুলোতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মধ্যে একটা বিরাট অংশ বন্ধ্যাত্ব নিয়ে উচ্চতর গবেষনা করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একজন হলেন ডাঃ মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম ভূইয়া যিনি অনেক সফলতার সাক্ষী এবং দেশি বিদেশি পুরস্কারে একাধিকবার ভূষিত হয়েছেন।
নারী বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ: এই ৫টি সংকেত জানলে সচেতন হোন
সেক্স বৃদ্ধির খাবার তালিকা। শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ে যেসব খাবারে
সফলতার গল্প
আপনি কি ঢাকার সেরা বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ খুঁজছেন? ডা. মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আইভিএফ ও বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ, যার ১৩ বছরের অভিজ্ঞতা এবং ১০০টিরও বেশি সফল আইভিএফ সাফল্য রয়েছে।
গর্ভাবস্থা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের YouTube এবং Facebook পেজে ভিজিট করুন:
- YouTube: Infertility Solution by Dr. Rafiqul
- Facebook: Infertility Solution BD
সঠিক তথ্য ও দিকনির্দেশনা পেতে এবং আমাদের কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এখানে ভিজিট করুন: Google Maps