বর্তমানে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির জন্য অনেক উন্নত চিকিৎসার সুব্যবস্থা রয়েছে। নারী পুরুষ উভয়ের জন্য কার্যকর একটি উপায় হতে পারে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। যারা দীর্ঘদিন ধরে বাচ্চা নিতে চান না বা বিয়ের শুরুতে বাচ্চা নেয়ার ইচ্ছা নাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে নানা ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। পুরুষের জন্য ভেসেকটমি এবং নারীদের জন্য টিউবাল লাইগেশন হলো বাচ্চা নির্মূলের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তবে কিছুদিন বাচ্চা নেয়ার ইচ্ছা না থাকলে আপনি পিল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। সাময়িক সিদ্ধান্তহীনতায় আপনি নিজের বিরাট অশান্তি ডেকে নিয়ে আসতে পারেন। এর ফলস্বরূপ বন্ধ্যাত্ব আপনার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াবে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে নারী বা পুরুষ যে কেউ ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে সঠিক চিকিৎসা ও গাইডলাইন মেনে চললে সবকিছু থেকেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি?
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হলো স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘদিন যাবত সন্তান জন্মদানের ঘটনাকে ধুলিমাখা করা বা নষ্ট করা। বিভিন্ন উপায়ে এই পদ্ধতিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা যায়। গর্ভনিরোধক সহ পিল, ইনজেকশন, স্পঞ্জ এবং শুক্রাণু নষ্ট করা হলো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপায়।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির কারণসমূহ
১. দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎস-ভেসেকটমি হলো পুরুষদের জন্য উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম। ভেসেকটমির সাহায্যে শুক্রাণু মূত্রনালীতে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকে যার ফলে যৌনমিলনে একজন মহিলার নিষিক্তকরণ রোধ হয়।
তেমনি নারীদের জন্য রয়েছে টিউবাল লাইগেশন অর্থাৎ অস্ত্রোপাচার পদ্ধতি যার সাহায্যে ফ্যালোপিয়ান টিউবগুলি স্থায়ীভাবে অবরুদ্ধ বা অপসারণ করা হয়।তাই বলা যায়, নারীদের জন্য স্থায়ী চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা জরুরি।
২.হরমোন থেরাপি-নারীদের জন্য হরমোন থেরাপি হলো কার্যকর একটি উপায়। হরমোন থেরাপির সাহায্যে নারীর হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অনেক সময় প্রোজেস্টেরন ও এস্ট্রোজেন এর ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।
৩. কাউন্সিলিং এর অভাব-সঠিক চিকিৎসা ও গাইডলাইন না থাকায় যে কেউ বিভিন্ন সমস্যায় সম্মুখীন হতে পারে।একজন চিকিৎসক তাই সঠিক তথ্য দিয়ে রোগীকে পরামর্শ না দিলে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ধারা নষ্ট হবে। কাউন্সিলিং এর ফলে আপনি আপনার সঠিক চিকিৎসা ও নিয়ম মেনে সামনে জীবনযাপন করতে পারবেন।
৪.মেডিসিন নিয়ে অজ্ঞতা-মেডিসিন নিয়ে কারো যদি অজ্ঞতা থাকে সেই ব্যাক্তি ভুল পথ বাছাইয়ের মাধ্যমে নিজের যৌবনকে ভয়াবহ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন। সামান্য ভু্লে চরম অশান্তির সৃষ্টি হতে পারে দাম্পত্য জীবনে।
৫.লাইফস্টাইল পরিবর্তন – লাইফস্টাইল বলতে সাধারণত খাবারের অভ্যাস,অ্যালকোহল পান, স্মোকিং অভ্যাসকে বোঝানো হয়ে থাকে।কিছু কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপে যা বিঘ্ন ঘটাবে এবং সমস্যা ত্বরান্বিত করবে।
পদক্ষেপসমূহ
১. হেল্থ স্ক্রিনিং
হেল্থ স্ক্রিনিং হলো রোগ নির্নয়ের পদ্ধতি বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার উপায়। এর সাহায্যে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা হঠাৎ করে চলে আসে, আলট্রা সহ প্রেগ্ন্যাসি টেস্ট করার মাধ্যমে একজন গর্ভবতী মহিলার ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করা যায়। যদি তার রেজাল্ট পজিটিভ আসে তাহলে সেই বিষয়ে যথাযথ বাস্তবায়ন করা লাগবে।
২. সঠিক চিকিৎসা
গাইনেকোলজির সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে আপনি আপনার সঠিক চিকিৎসা পেতে পারেন। কতিপয় ঔষধের মধ্যে রয়েছে, আই পিল ডিএস ১.৫মি.গ্রা,Levonorgestrel,ছোট পিল সহ বিভিন্ন মেডিসিন ডাক্তাররা সচরাচর প্রেসক্রাইব করে থাকেন।
৩. IUD
IUD হলো অন্তঃসত্ত্বা ডিভাইস যার সাহায্যে জরায়ুতে এই ডিভাইস দিয়ে গর্ভাবস্থা প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।এই ডিভাইসের সাহায্যে একজন গর্ভবতী মায়ের সাথে খুব ভালো ভাবে পরীক্ষা করে তার গর্ভধারণের দিকটা প্রতিফলন করা যায়।
৪. গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট
গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট হলো উপরের বাহুর ত্বকে প্রবেশকৃত একটি পাতলা রড যা আপনার সেক্স করার সময় ও আপনাকে সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।প্রায় তিন বছর ও লাগতে পারে এই ইমপ্লান্ট চিকিৎসার। উন্নত মানের চিকিৎসক ছাড়া ইমপ্লান্ট করার চিন্তা করলে রোগীর শরীরে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। এই পদ্ধতিতে প্রোজেস্টোজেন হরমোন থাকায় তা শরীরে বিভিন্ন উপায়ে ডিম্বানু নিঃসরণকে কমিয়ে দেয় এবং জরায়ুর মধ্য দিয়ে শুক্রাণুর চলাচলকে আটকায়। যার ফলে যৌনমিলনের সময় আপনার গর্ভধারনের সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যাবে।
পিলের সাইড এফেক্ট
১. মাথা ঘোরা
২. অবসাদ
৩.মাসিক পরিবর্তন
৪. বমি বমি ভাব
৫. বারবার ব্যবহার
৬. এলার্জি প্রতিক্রিয়া
সাধারণত কনডম সহ অন্তঃসত্ত্বা ডিভাইস ব্যবহার করলেও মাঝেমধ্যে জরুরি গর্ভনিরোধক হিসাবে কিছু মেডিসিন দেয়া হয়।যথাযথ নিম্নরূপ :
১.উলিপ্রিস্টাল অ্যাসিটেট হলো এলা যা জরুরি অবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হয়।
২.কপার আইইউডি হলো দীর্ঘমেয়াদী কার্যকর একটি উপায় যা সচরাচর খুব জটিল অবস্থা ছাড়া দেয়া হয় না। আপনার বর্তমান অবস্থার উপর ভিত্তি করে আপনি সঠিক চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টা করুন। তাছাড়া সঠিক উপায়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আপনি হাল ছেড়ে দিবেন না, বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে কিভাবে সুচিকিৎসা দিয়ে নিজের জীবনকে পরিবর্তন করা যায় সেই চিন্তায় মনোনিবেশ করুন।
গর্ভাবস্থা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের YouTube এবং Facebook পেজে ভিজিট করুন:
- YouTube: Infertility Solution by Dr. Rafiqul
- Facebook: Infertility Solution BD
সঠিক তথ্য ও দিকনির্দেশনা পেতে এবং আমাদের কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এখানে ভিজিট করুন: Google Maps