গর্ভবতী মায়ের সতর্কতা হিসেবে প্রথম তিন মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রয়েছে, যা একজন প্রসূতি নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তাছাড়া নিজের ভুলের মধ্য দিয়ে গর্ভবতী মায়ের শরীরে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন জটিল সমস্যা। বলা যায়, প্রথম তিন মাস থেকে শুরু করে নয় মাস পর্যন্তই আপনাকে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। কারন এই সময়ে এবরশনের সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। ছোট এক ভুলের কারনে আপনি অনায়াসেই খুব বড় বিপদের মুখে পড়তে পারেন। সুখী দাম্পত্য জীবনে দেখা দিবে কলহ!
একজন গর্ভবতী মায়ের জীবনে গর্ভাবস্থায় অনেক নিয়ম মেনে চলা জরুরি । প্রথম মাস থেকে শুরু করে প্রথম তিন মাসের মধ্যে যেকোনো সময়ে একটি ভুল গর্ভাবস্থায় কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে।
গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসে প্রাথমিক কিছু লক্ষণ দেখা যায়, নিম্নরূপঃ
- স্তন নরম হয়ে যাওয়া
- মেজাজে চরম পরিবর্তন হওয়া
- বমি-বমি ভাব বা বমি
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া
- চরম ক্লান্তি বোধ হওয়া
- মাথাব্যথা করা
- বুকজ্বালা করা
খাদ্য তালিকা বাছাই করা,উপযুক্ত সময়ে খাবারের মান নির্ধারন করা খুবই জরুরি। তাই গর্ভবতী নারীর নিজের দিকে যত্ন রাখা যেমন জরুরি ঠিক তেমনি বাচ্চার জন্য সঠিক চিকিৎসা ও দিকনির্দেশনা মেনে চলা দরকার। আসুন জেনে নেয়া যাক,গর্ভবতী মায়ের সতর্কতায় কি কি নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
১.আদর্শ খাবার
আদর্শ খাবারের মধ্যে রয়েছে পুষ্টিকর খাবার অর্থাৎ দুধ,ডিম,মাংস সহ চর্বিযুক্ত মাছ যেখানে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসহ নানা পুষ্টি উপাদান। একজন নারীর গর্ভাবস্থায় তরল খাবার ও পানির দিকে বিশেষ নজর দেয়া জরুরি। সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন আপনার খাদ্য তালিকায়। এবার কোন খাবারে রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তা নিয়ে আলোচনা করা যাক।
১.পাস্তুরিত দুধ,দুধের তৈরি খাবার পরিহার করুন।
২. জাংক ফুড সহ কাঁচা মাংস দিয়ে তৈরিকৃত খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি কারন এসব খাবারের জন্য শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩.কাঁচা দুধ বা বাহিরের ভাজাপোড়া থেকে এড়িয়ে চলুন।
৪. অতিরিক্ত তেলে ভাজা বা মশলাদি খাবারে রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তাই এসব খাবার কম খাওয়ায় রয়েছে সুখ।
৫.ক্যাফেইন গ্রহণে চিকিৎসকের সাথে পরমার্শ করা জরুরি।
২.পুষ্টিকর খাবার
ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। ফল, সবজি, দানাশস্য, প্রোটিন এবং দুধজাতীয় খাবার খাবেন।তাছাড়া আপনার শরীরের অপুষ্টি দূর করতে আঁশজাতীয় খাবার ও বেশ কাজে দেয়। শরীরে চাহিদা পূরণ করা যেমন জরুরি ঠিক তেমনি নারীদের হরমোন ও ফলিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি।
৩.ফল ও সবজি ভালোভাবে ধোয়া
ব্যাকটেরিয়া বা রাসায়নিক থেকে দূরে থাকতে সবজি ও ফল ভালোভাবে ধোয়া উচিত।কাচা সবজি খাওয়ার অভ্যাসে খারাপ পরিনতি হতে পারে। পেটের অসুখসহ যে কোন বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
৪.অ্যালকোহল ও ধূমপান
অ্যালকোহল পান এড়িয়ে চলুন। এটি গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।মা ও শিশু উভয়ের জন্য রয়েছে ক্ষতিকর দিক তথা ফুসফুস ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ পরিণতির কারণ হতে পারে।
নিয়মিত গাইনি ডাক্তারকে দেখান এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলি করান। আলট্রাসাউন্ড সহ রেগুলার চেকআপে পাবেন শরীরের জটিল জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি। প্রাথমিক পর্ব থেকে শুরু করে
৬.ভ্যাকসিনেশন
গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন যেমন ফ্লু এবং টিটানাসের জন্য ডাক্তার থেকে পরামর্শ নিন। তাছাড়া সময় উপযুক্ত চিকিৎসা নেওয়া ও দরকার। মানসিক চাপ কমাতে মনোরম পরিবেশ তৈরি করুন।
৭.ব্যায়াম
হালকা ব্যায়াম করুন, তবে কোনো নতুন ব্যায়ামের আগে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। প্রথম তিন মাসে যেকোন কাজ খুব সাবধানে করা উচিত কারন এতে আপনার শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়ার পাশাপাশি বাচ্চার ভ্রুনের বিকাশে ব্যঘাত ঘটতে পারে।
৮.ক্যাফিনের পরিমাণ
ক্যাফিন সেবন সীমিত করুন। কারন অতিরিক্ত পানে রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। উচ্চ তাপমাত্রা এড়িয়ে চলুন। ঠান্ডা পানি পান করা থেকে ও বিরত থাকুন।
পরিশেষে বলা যায়, সংক্রামক রোগ থেকে ও ছড়াতে পারে। মায়ের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা এবং এই সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। এই সতর্কতাগুলো অনুসরণ করে গর্ভবতী মা তার এবং শিশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারেন। তাছাড়া সঠিক সময়ে গাইডলাইন ও কাউন্সিলিং এর মধ্যে রয়েছে একজন মায়ের সঠিক জন্মদানের নিশ্চয়তা!
শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে মানসিক অবস্থা দৃঢ় রাখা জরুরি। কারন এই সময়ে একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা হঠাৎ করে চলে আসছে।এই সময়ে মানসিক অবস্থা ঠিক রাখা পরিবারের জন্য অত্যন্ত দরকার।
গর্ভাবস্থা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের YouTube এবং Facebook পেজে ভিজিট করুন। গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও নির্দেশনা পেতে লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করুন:
- YouTube: Infertility Solution by Dr. Rafiqul
- Facebook: Infertility Solution BD
সঠিক তথ্য ও দিকনির্দেশনা পেতে যুক্ত থাকুন আমাদের সাথে!