ঠিকানা

বাংলাদেশ ফার্টিলিটি হাসপাতাল লিঃ ই ব্লক, মেইন রোড, বনশ্রী, রামপুরা ঢাকা ( বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল থেকে ১০০ মিটার পূর্বে)

Book an appointment

০১৯৭৫০০৯৭৯৬

ঠিকানা

বাংলাদেশ ফার্টিলিটি হাসপাতাল লিঃ ই ব্লক, মেইন রোড, বনশ্রী, রামপুরা ঢাকা ( বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল থেকে ১০০ মিটার পূর্বে)

Book an appointment

০১৯৭৫০০৯৭৯৬

গর্ভবতী মায়ের যে কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে

গর্ভাবস্থায় নারীর শরীরে অনেক পরিবর্তন ঘটে এবং এই সময়ে কিছু কাজ থেকে বিরত থাকা অত্যন্ত জরুরি। মায়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা এবং শিশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে নীচে উল্লেখিত কিছু কাজ থেকে বিরত থাকার প্রয়োজনীয়তা এবং কারণগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো। গর্ভবতী মায়েদের জন্য কিছু কাজ থেকে বিরত থাকা মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকার পুর্বশর্ত। একজন গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যগত সকল দিক বিবেচনা করতে হয় কেননা একজন সুস্থ্য মা একজন সুস্থ সন্তান আগমনের দার উন্মুক্ত করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের তালিকা উল্লেখ করা হলো।

গর্ভবতী মায়ের যে সকল কাজ থেকে বিরত থাকা উচিৎঃ

১. ভারী বস্তু উত্তোলনে বিরতি

গর্ভবতী অবস্থায় ভারী বস্তু উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভারী বস্তু উঠানোর ফলে পেটের উপর চাপ পড়তে পারে, যা প্রাথমিক পর্যায়ে গর্ভপাত বা পরে জন্মগত ত্রুটি সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে কোমর ও পিঠেও ব্যথা হতে পারে। সুতরাং, ভারী বস্তু উত্তোলনের পরিবর্তে সাহায্য নেওয়া এবং হালকা কাজগুলো করা উচিত। মনে রাখতে হবে এই সময়ে সামান্য নিজের ক্ষতি মানে গর্ভের বাচ্চার বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা।

২. তীব্র শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলা

গর্ভবতী মায়েদের জন্য তীব্র শারীরিক কার্যকলাপ যেমন দৌড়ানো, দ্রুত হাঁটা বা দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বিরত থাকা উচিত। এই ধরনের পরিশ্রমে শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত পরিশ্রম গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, শারীরিক পরিশ্রম ভাল তবে তীব্রতর হলে তা সমস্যার কারন হয়ে উঠার সমুহ সম্ভাবনা আছে।

৩. যেসব খাবার খাওয়া যাবেনা

গর্ভাবস্থায় কিছু খাদ্য গ্রহণ করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কাঁচা মাছ, কাঁচা মাংস, কাঁচা ডিম এবং অশুদ্ধ দুধের পণ্য এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলোতে লিস্টেরিয়া, সালমোনেলা বা টক্সোপ্লাজমা ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। এইসব ইনফেকশন শিশুর বিকাশে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। খাবার গ্রহনের সময় সার্বিক গুনাগুন যেনে বুঝে খাবার গ্রহন করা উচিৎ বলে পুষ্টিবিদগণ ও চিকিৎসকগণ মত দিয়েছেন।

৪. মদ্যপান এবং ধূমপানে যতি টানি

মদ্যপান এবং ধূমপান গর্ভাবস্থায় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মদ্যপান গর্ভস্থ শিশুর ব্রেইন এবং দেহের অন্যান্য অঙ্গের বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা ফিটাল অ্যালকোহল স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (FASD) নামক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। একইভাবে, ধূমপানের ফলে শিশুর জন্মগত ত্রুটি এবং অপরিপক্ক জন্মের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। মদ্যপান এবং ধূমপান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে নানাবিধ ক্ষতিকর কারন হিসেবে চলে আসছে। তাই নারী বা পুরুষ যারই এই ধরনের অভ্যাস আছে, আমাদের সকলের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব এ সকল বদ অভ্যাস পরিত্যাগ করা।

৫. অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এড়িয়ে চলি

প্রসেসড ও ফাস্ট ফুড এবং অতিরিক্ত চিনি ও ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এই ধরনের খাবার উচ্চ ক্যালোরি এবং পুষ্টিহীন। গর্ভাবস্থায় সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য যেমন ফল, শাকসবজি, পূর্ণ শস্য ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।

৬. মানসিক চাপ পরিহার করি

গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমানোর চেষ্টা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপ মা ও শিশুর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এটি শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্ন ঘটাতে পারে, যা শিশুর বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যোগব্যায়াম, মেডিটেশন এবং হাঁটা চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

৭. উচ্চ তাপমাত্রা থেকে দুরে থাকি

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত উচ্চ তাপমাত্রা এড়িয়ে চলা উচিত। স্যাঁতসেঁতে বা খুব গরম স্নান গর্ভবতী মায়ের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে এবং তাতে শিশুর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই, শীতল পরিবেশে থাকতে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

৮. জীবাণু বা রোগাক্রান্ত পরিবেশে থাকা চলবে না

গর্ভাবস্থায় জীবাণুর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। অতএব, জনবহুল স্থান এবং ধূমপানের এলাকা এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়াও, যেকোনো প্রকার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা থেকেও বিরত থাকতে হবে।

৯. কঠিন আবহাওয়ায় অনেক ক্ষতি

গর্ভবতী অবস্থায় খুব ঠান্ডা বা খুব গরম আবহাওয়ায় বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। আবহাওয়ার পরিবর্তনে শরীরের প্রতিক্রিয়া পরিবর্তিত হয়, যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। শরীরকে সুস্থ রাখতে উপযুক্ত পোশাক পরা এবং আরামদায়ক পরিবেশে থাকা উচিত।

১০. ওষুধ সেবনে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করি

গর্ভাবস্থায় কোনো ওষুধ গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু ওষুধ গর্ভাবস্থায় নিরাপদ নয় এবং শিশুতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক, NSAIDs (Non-steroidal anti-inflammatory drugs) এবং কিছু ভিটামিন বা মিনারেলের অতিরিক্ত গ্রহণও ক্ষতিকারক হতে পারে।

উপসংহার

গর্ভাবস্থায় সুরক্ষা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মায়েদের উচিত সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে চেষ্টা করা। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা, সঠিক পুষ্টি গ্রহণ, এবং মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপে সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মায়ের জন্যও স্বস্তিদায়ক হবে। বন্ধ্যাত্ব নারীর গর্ভধারন নিয়ে যে কোন ধরনের পরামর্শের জন্য ঢাকা তথা সারা বাংলাদেশের মধ্যে স্বনামধন্য ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ রফিকুল ইসলাম ভুইয়ার সাথে কথা বলতে পারেন। সকল মা এবং অনাগত সন্তানের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে শুভকামনা থাকলো