বন্ধ্যাত্ব এবং মানসিক স্বাস্থ্য একটি পরস্পর সম্পর্কিত বিষয়, এবং সেক্সের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। যখন একজন দম্পতি সন্তান ধারণে ব্যর্থ হন, তখন এটি তাঁদের মানসিক অবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলে। অনেক সময় হতাশা, উদ্বেগ এবং চাপ অনুভূত হয়, যা সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে। এখানে আমরা বন্ধ্যাত্ব এবং মানসিক স্বাস্থ্যে সেক্স এর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সেক্সের মাধ্যমে মানুষ শারীরিক এবং মানসিক সংযোগ বজায় রাখতে পারে। কিন্তু যখন সেক্স শুধু প্রজননের উদ্দেশ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়, তখন তা নানাবিধ চাপ বাড়াতে পারে। ফলে, দম্পতিরা অনেক সময় সেক্সকে একটি দায়িত্ব হিসেবে দেখেন, যা তাদের মধ্যে স্নেহ ও ভালোবাসা ক্রমেই কমিয়ে দিতে থাকে।
স্বাস্থ্যকর যৌন জীবন মানসিক চাপ কমাতে যেমন সহায়তা করে তেমনি শরীরের জন্যও নানান উপকার আনয়ন করে থাকে। সেক্সের সময় শরীরে এন্ডরফিন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে, গুরুত্বপূর্ণ হল, দম্পতিদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা এবং পরস্পরের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকা। এই ভালবাসার মাধ্যমে সম্পর্কের গুণগত মান বজায় রাখা সম্ভব। শুধু মানুষ নয়, সকল প্রাণীর জীবনে সেক্স এর প্রভাব অতীব গুরুত্বপুর্ন বলে বিশেষজ্ঞগণ মতামত দেন।
বন্ধ্যাত্বের মানসিক প্রভাব
১. হতাশা ও উদ্বেগঃ বন্ধ্যাত্বের ফলে দম্পতিরা অনেক সময় হতাশায় ভোগেন। সন্তান ধারণের আশা যখন পূরণ হয় না, তখন হতাশা এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়। নানাবিধ খারাপ চিন্তা মনে বাসা বাধে। মানসিক অসুস্থতায় পরিনত হয় সুন্দর জীবনটি।
২. সম্পর্কের চাপঃ সন্তান ধারণের চাপ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে, একে অপরের প্রতি হতাশা বা আক্রোশ বাড়তে পারে। অনেক সময় একে অন্যের মাঝে নানা সময়ে ছোট্ট কারনেও সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে।
৩. স্বাস্থ্য সমস্যাঃ মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দীর্ঘস্থায়ী হলে শারীরিক স্বাস্থ্যেও সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন মাথাব্যথা, ঘুমের সমস্যা, ইত্যাদি। নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে রোগব্যাধি বড় ও জটিল আকার ধারন করে।
সেক্সের ভূমিকা
১. মৌলিক ইচ্ছাঃ সেক্স একটি মৌলিক মানবিক প্রবৃত্তি। যখন এটি শুধু সন্তান ধারণের জন্য চাপ হয়ে দ্বাড়ায়, তখন এই চাপ যৌন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অনেক সময় সেক্স একটি দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়, যা মানসিক চাপ বাড়ায়। মনে রাখা উচিৎ সেক্স উপভোগের জিনিস দায়িত্ব কর্তব্য নয়। হ্যা অনেক সময় স্ত্রীর দায়িত্ব স্বামীকে সন্তষ্ট করা এবং তেমনি করে সেই স্বামীর দায়িত্ব স্ত্রীর অর্গাজম ঘটানো।
২. মানসিক স্বস্তিঃ সেক্স একটি সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা ও সংযোগের অনুভূতি তৈরি করতে সাহায্য করে। যৌনক্রিয়া শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার মাধ্যমে মানসিক চাপ কমাতে পারে। সেক্সের সময় শরীরে এন্ডরফিন এবং অক্সিটোসিন নিঃসৃত হয়, যা স্বামী স্ত্রী উভয়ের মধ্যেই আনন্দ এবং স্বস্তির অনুভূতি দেয়।
৩. যোগাযোগঃ সেক্সের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ে। একে অপরের অনুভূতি, আশা এবং চিন্তা শেয়ার করা যায়, যা সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে। সেক্স এমনই এক উপকরন যা সন্তান জন্মদানে সীমাবদ্ধ নয় বরং সুন্দর জীবন যাপনের গুরুত্বপুর্ন অংশ হিসেবে ভুমিকা পালন করে।
স্বাস্থ্যকর দৃষ্টিভঙ্গি
স্বাস্থ্যকর সেক্স জীবন এবং বন্ধ্যাত্বের মোকাবেলা করতে চাইলে যে বিষয়গুলি জীবনের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে সেক্স বিশেষজ্ঞগণ মতামত দিয়েছেনঃ
- খোলামেলা আলোচনাঃ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৎ আলোচনা হওয়া দরকার। নিজেদের অনুভূতি শেয়ার করা এবং সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা উচিত।
- মানসিক সমর্থনঃ একজন থেরাপিস্ট বা কাউন্সেলরের সাহায্য নিতে পারেন, যারা মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে পারেন।
- শারীরিক সম্পর্কের উপর দৃষ্টিপাতঃ শুধুমাত্র প্রজননের উদ্দেশ্যে সেক্স না করে, একে সম্পর্কের উন্নতির একটি মাধ্যম হিসেবে দেখতে হবে।
উপসংহার
বন্ধ্যাত্ব এবং মানসিক স্বাস্থ্য পরস্পর সম্পর্কিত। সঠিকভাবে সেক্স জীবন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে সমন্বয় ঘটালে, দম্পতিরা এই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে পারবেন এবং সহজে সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন বলেই চিকিৎসতগণ মতামত দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে যে, শারীরিক সম্পর্ক বা সহবাস শুধুমাত্র সন্তান ধারণের জন্য নয়, বরং সম্পর্কের স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধ্যাত্ব এবং মানসিক স্বাস্থ্যে সেক্স এর প্রভাব অতীব জরুরি ও গুরুত্ব বহন করে। একে অন্যের মতামত এবং শারীরিক মানসিক চাহিদাকে সম্মান করুন। গুরুত্ব দিন। দেখবেন দুরত্ব তৈরি হবেনা বরং সুন্দর জীবনের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। বন্ধ্যাত্ব নিয়ে যে কোন ধরনের সেবা অথবা স্বাস্থ্য পরামর্শের জন্য ডাক্তার রফিকুল ইসলাম ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করুন। সকলের জন্য শুভকামনা। সুস্থ্য থাকুন। সুন্দর থাকুন। আনন্দের মধ্যে থাকুন।
সফলতার গল্প
আপনি কি ঢাকার সেরা বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ খুঁজছেন? ডা. মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আইভিএফ ও বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ, যার ১৩ বছরের অভিজ্ঞতা এবং ১০০টিরও বেশি সফল আইভিএফ সাফল্য রয়েছে।
গর্ভাবস্থা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের YouTube এবং Facebook পেজে ভিজিট করুন:
- YouTube: Infertility Solution by Dr. Rafiqul
- Facebook: Infertility Solution BD
সঠিক তথ্য ও দিকনির্দেশনা পেতে এবং আমাদের কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এখানে ভিজিট করুন: Google Maps