পুরুষের বন্ধ্যাত্ব বলতে সাধারণত একজন পুরুষের সন্তান জন্মদানে অক্ষমতাকে বোঝানো হয়। সমাজে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব বিষয়ে বিভিন্ন কথা প্রচলিত রয়েছে। পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য বজায় না রাখলে স্বাভাবিক জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। তাই গবেষণায় বলা আছে, পুরুষের যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে ও সংবেদনশীল রাখতে হলে শুক্রাণুর সংখ্যা পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকা উচিত। বর্তমান সময়ে মানসিক শান্তি ও পরিবারের চাপে অনেকে কাউন্সিলিং বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বিভিন্ন থেরাপি ও চিকিৎসা দিয়ে সহজেই এখন বন্ধ্যাত্ব কাটিয়ে উঠা যায়। পুরুষের দেহের শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়া বা তার কার্যকারিতা কম হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয় এবং তার চিকিৎসা নিয়ে বিশদ জানা জরুরি।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণঃ
ইরেক্টাইল ডিজফাংশন
ইরেক্টাইল ডিজফাংশন হলো যখন একজন পুরুষ সহবাসের সময়ে তার ইরেকশন বজায় রাখতে সমস্যা হওয়া বা টিকিয়ে রাখতে কষ্ট হওয়া। মেডিকেলের ভাষায় ইরেক্টাইল ডিজফাংশন হলে তাদের বন্ধ্যা বলা হয়। তাই এই সমস্যা খুব গুরুতর হয়ে দাঁড়ায় যখন আপনার মধ্যে দীর্ঘ এক বছর চেষ্টা করার পর ও কোন উন্নতি সাধন পরিলক্ষিত হবে না।
যে ব্যক্তির ইরেক্টাইল ডিজফাংশন সমস্যা আছে সে কখনো গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত হবে না। ইরেক্টাইল ডিজফাংশনের সাথে শুক্রাণুর সংখ্যা কম বা বেশির কোন সম্পর্ক নেই।
অস্বাভাবিক রূপ
শুক্রাণুর গতি বা অস্বাভাবিক রূপ হলো শুক্রাণুর আকৃতি বা তার মাথার আকৃতির জন্য ডিমের শরীরে প্রবেশ করতে সমস্যা হওয়া। শুক্রাণুর গতি দুর্বল হওয়া বা তার চলনে বাঁধাপ্রাপ্ত থেকে পুরুষের যৌন মিলনে ব্যাঘাতের সৃষ্টি হয়।
গুনগত মান খারাপ
পুরুষের দেহে প্রায় দশ মিলিয়নের চেয়ে কম শুক্রাণু উপস্থিত হলে সেক্ষেত্রে তার গুনগত মান খারাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই যখন শুক্রাণু উপস্থিত থেকে তার চলন বা গতির জন্য গর্ভধারণে সমস্যা হয় তাহলে তার জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। অনেকের এমন হয় বীর্যে একদমই শুক্রাণু উপস্থিত না থাকে তার জন্য চিকিৎসা আপাতত নেই বলে ধারণা করা যায়। শুক্রাণু বিপরীতমুখী প্রবাহে চলে অর্থাৎ এর নির্গত হওয়া আর ডিমে প্রবেশ করতে বিপদে পড়ার জন্য বন্ধ্যাত্বের সূত্রপাত ঘটে।
যৌন মিলনে অনিচ্ছা
কিছু পুরুষদের মধ্যে সেক্স করার প্রবণতা কম হতে পারে। এর জন্য তাদের সহবাসের প্রতি তেমন আগ্রহ জন্মায় না।এসব সমস্যা থেকে ও পরবর্তীতে বড় বড় সমস্যা শুরু হয়।
আপনার যদি হরমোন বেড়ে বা কমে যায়, অন্ডকোষে ব্যথা অনুভব হয় তাহলে বন্ধ্যাত্ব হবার ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
অন্যান্য
মেডিসিন – মেডিসিন দিয়ে সাময়িক কিছু অবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং শুক্রাণুর আকৃতি বা গতির জন্য, হরমোন লেভেলের জন্য চিকিৎসক কিছু মেডিসিন প্রেসক্রাইব করতে পারেন।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বে চিকিৎসা
সার্জারি– শুক্রাণুর নালী অনেক সময় ব্লক হয়ে যাওয়া বা আটকে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এসব নিয়ে সার্জনরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন এবং ছোটখাটো অপারেশনের প্রয়োজন মনে হলে করাতে পারেন।
আইভিএফ– আইভিএফ হলো উন্নত চিকিৎসা যা চপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেকাংশেই বাড়িয়ে দিবে। এই পদ্ধতিতে শুক্রাণু দশ মিলিয়নের কম হলে সাধারণত ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হয়।
টেস্টটিউব– যখন শুক্রাণুর পরিমাণ আরো কমতে শুরু করবে তথাপি পাঁচ মিলিয়ন এর কম হয়ে যাবে তখন তার জন্য টেস্টটিউব চিকিৎসা দিতে হয়। অনেকের বীর্যে একদমই শুক্রাণু উপস্থিত থাকে না তার জন্য চিকিৎসা নেই।
৫ উপায়ে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব চিহ্নিত করার উপায়
১. হরমোন চেক করাঃ আপনার সহবাসে যখন সমস্যা মনে হবে বা আপনি মানসিক শান্তি পাচ্ছেন না এমন পরিস্থিতিতে আপনি হরমোন লেভেল চেক করে নিবেন। এতে আপনার শরীরে কোন হরমোন কমবেশি থাকলে সেটার জন্য চিকিৎসা নিতে হবে।
২. শুক্রাণু কাউন্ট করাঃ হরমোন মেপে দেখারপর আপনার শুক্রাণুর সংখ্যা কাউন্ট করা লাগবে এতে আপনার শুক্রাণুর গতি বা কার্যকারিতা আপনি নিশ্চিত করতে পারবেন। শুক্রাণু বেশি হলে আপনার শরীরের অন্য সমস্যাগুলি খুঁজে দেখুন এবং কম হলে তার জন্য চিকিৎসা নিতে হবে।
৩.সেক্স প্রবণতাঃ সেক্স প্রবণতা কমে যাওয়া ও সমস্যার মধ্যে পড়ে। তাই আপনার মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিলে সাইকোলজিস্ট সহ চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হোন।
৪.বীর্যপাত কম হওয়াঃ কিছু পুরুষের দৈহিক গঠন ও অন্যান্য সমস্যার জন্য বীর্যপাত কম হতে পারে। এতে আপনার শরীরের অন্যান্য সমস্যাগুলি আরো বেড়ে যায়।
৫. দুশ্চিন্তা কাজ করাঃ কাজের চাপ বা মানসিক বিষয়ে কোন টেনশন হলে শরীরের হরমোন সহ সাইকেল পরিবর্তন হয়ে যায়। এতে আপনার যৌন জীবনে ও প্রভাব ফেলতে পারে।
পরিশেষে বলা যায় – পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেক সময়ই তার শারীরিক গঠন ও বংশগতির ধারণা মাথায় রেখে তখন চিকিৎসা দেয়া হয়।তাই সবার লক্ষণ ও এক না এবং সবার চিকিৎসা নেয়ার ক্ষমতা ও আলাদা হয়ে থাকে। তবে যদি আপনি সুখময় জীবন অতিবাহিত করতে চান তাহলে আপনার সঠিক চিকিৎসা ও গাইডলাইন মেনে চলা জরুরি।
সফলতার গল্প
আপনি কি ঢাকার সেরা বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ খুঁজছেন? ডা. মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আইভিএফ ও বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ, যার ১৩ বছরের অভিজ্ঞতা এবং ১০০টিরও বেশি সফল আইভিএফ সাফল্য রয়েছে।
গর্ভাবস্থা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের YouTube এবং Facebook পেজে ভিজিট করুন:
- YouTube: Infertility Solution by Dr. Rafiqul
- Facebook: Infertility Solution BD
সঠিক তথ্য ও দিকনির্দেশনা পেতে এবং আমাদের কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এখানে ভিজিট করুন: Google Maps