আমাদের দেশ ছয় ঋতুর দেশ। বছরের শেষের দিকে আগমন হয় শীতের। শীতে সাধারনত শরীরের যত্নে কিছুটা ভিন্নতা আসে। অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি যত্ন আবদার করে বসে আমাদের শরীর। শিশুদের বেলায়ে ও শীতের সময় বাড়তি যত্ন করতে হয়। শীতে নানাবিধ রোগ যেমন আক্রমন করে থাকে তেমনি শরীর রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শীতে শিশুদের যত্নে বাড়তি মনোযোগ দিতে হয়। আজকে আমরা মুলত শীতে শিশুর যত্নের টিপস গুলি নিয়ে আলোচনা করবো। যে সহজ টিপস গুলি অনুসরন করলে শীতেও আপনার আদরের সোনামনি থাকবে অত্যান্ত কোমল ও সুস্থ। আপনার জন্য বাড়তি টেনশনের সমাধান আজকের আর্টিকেলে। মনোযোগ দিয়ে ৫ মিনিট সময় দিন। পড়তে থাকুন শীতে শিশুর যত্নের টিপস।
শীতে শিশুকে উষ্ণ রাখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হলোঃ
১. আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক পরিধান করানো।
শীতে শিশুর শরীর উষ্ণ রাখতে মাল্টি-লেয়ারের পোশাক পরানো সবচেয়ে ভালো। সাধারণত, দুটি বা তিনটি লেয়ার পরিয়ে শিশুকে উষ্ণ রাখা যায়।
প্রথমে পাতলা, শ্বাসপ্রশ্বাসযোগ্য কাপড়, যেমন: সুতি কাপড় পরান, এরপর উষ্ণ কাপড় (যেমন: উলের জামা বা সোয়েটার) এবং বাইরে একটি উইন্ডপ্রুফ বা রেইনকোট ব্যবহার করতে পারেন।
শীতের সময় শিশুদের হাতে, পায়ে, কান এবং মাথা বেশি ঠাণ্ডা হয়ে যায়, তাই হাতমোজা, পা মোজা, কানটুপি এবং স্কার্ফ ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
২. ছোট শিশুকে বেশি গরম কাপড় পরাবেন না।
খুব বেশি গরম কাপড় পরানোর চাইতে শরীরের তাপমাত্রার সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। বেশি গরম কাপড় পরালে শিশুর ঘাম হতে পারে, যা ঠাণ্ডা লাগাতে পারে। অনেকে না বুঝে মোটা কাপড় পরিয়ে রাখে ফলে দেখা যায় শিশু প্রাইসময় অনেক ক্ষেত্রে অস্তির হয়ে ওঠে। মা হিসেবে এসব বিষয়ে খেয়াল করা অত্যান্ত জরুরি।
৩. গরম পানি দিয়ে সর্বদা গোসল
শীতে শিশুকে খুব ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্নান করানো ঠিক নয়। গরম (কিন্তু অতিরিক্ত গরম নয়) পানি দিয়ে স্নান করাতে পারেন, তবে স্নানের সময় নিশ্চিত হন, শিশুর শরীর সম্পূর্ণ শুকিয়ে গিয়েছে এবং শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। শিতে চেষ্টা করবেন কষ্ট হলেও প্রত্যাহ গোসল করানোর সময় গরম পানি ব্যাবহার করতে। তবে পানি যেন অতিরিক্ত গরম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন সবসময়।
৪. ঘরে উষ্ণ পরিবেশ বজায় রাখা গুরুত্বপুর্ন
জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে এখন শীতে তাপমাত্রায় ভিন্নতা দেখা যায়। তাই চেষ্টা করবেন ঘরের তাপমাত্রা যেন বেশি ঠান্ডা না হয়ে যায়।শীতে ঘরের তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঘরে হিটার বা গরম এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন, তবে শিশুর খুব কাছাকাছি রাখবেন না।
বাতাসে আদ্রতা (হিউমিডিটি) বজায় রাখতে একটা আর্দ্রকারী (হিউমিডিফায়ার) ব্যবহার করলে শুষ্কতা কমে, যা শিশুর ত্বক এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য উপকারী।
৫. গরম খাবার ও পানীয় ব্যবস্থা করুন শিশুর সুবিধায়
শিশুকে গরম খাবার খাওয়ানো ভালো, যেমন স্যুপ, দুধ, গরম পানি ইত্যাদি। শীতে দুধ এবং তরল খাবার শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খাবার ঠান্ডা হলে শিশুর শরীরে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই খাবারের দিকে খেয়াল দিন।
৬. শিশুর ত্বকের যত্ন
অনেক সময় দেখা যায় আদরের শিশুর ত্বক ফেটে গেছে বা অন্য নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয়। এসব থেকে পরিত্রান পেতে শীতের শুরু থেকেই শিশুর ত্বকের যত্নে বিশেষ গুরুত্বারোপ করুন।
শীতে শিশুর ত্বক খুব শুষ্ক হয়ে যায়, তাই শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগান। ত্বক নরম ও আদ্র রাখতে ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক ত্বক বা ফাটা ঠোঁটের জন্য শিশুর জন্য উপযুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করতে পারেন।
৭. শিশুর খেলা ও ঘুম
ছোট্ট শিশু খেলাধুলাতে বেশির ভাগ সময় মত্ত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এখানে খেয়াল রাখতেহবে শিশুর খেলা ও ঘুমের সময়ের যেন সমন্বয় সাধন করা যায়।
শিশু যেন শীতে খুব বেশি সময় এক জায়গায় না বসে থাকে বা ঘুমিয়ে না থাকে, কেননা শীতের সময় শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। খেলাধুলা বা হালকা শরীরচর্চা শিশুর তাপমাত্রা ঠিক রাখে। শোয়ার সময়, শিশুর শরীরে অতিরিক্ত কম্বল বা বিছানাপত্র ব্যবহার করতে পারেন, তবে খুব বেশি চাপানোর প্রয়োজন নেই।
৮. শীতকালীন রোগ প্রতিরোধ
শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নানা ধরনের অসুস্থতা প্রতিদিনই চ্যালেন্জ জানাবে। আপনাকে যত্নশীল হতে হবে এবং যে কোন সমস্যায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। মনে রাখবেন অল্প জ্বর বা ঠান্ডা কাশি অনেক সময় আমরা গুরুত্ব দেইনা। কিন্তু পরবর্তিতে এটাই বড় সমস্যা হয়ে ওঠে সমনে।
শীতে শিশুর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হতে পারে, তাই শিশুকে উষ্ণ রাখার পাশাপাশি শীতকালীন রোগ থেকে দূরে রাখতে নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সঠিক ভ্যাকসিনেশন নিশ্চিত করুন।
শেষ কথাঃ
এই টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনার শিশুকে শীতে উষ্ণ ও নিরাপদ রাখা সম্ভব। মনে রাখতে হবে সমস্যা যেহেতু আছে সমাধান ও আছে। হতাশ হলে চলবেনা। আপনার দায়িত্ব যত্ন নেওয়া এবং সঠিক ভাবে শিশুর পরিচর্যা করা। পরবর্তিতে যে কোন ধরনের অসুস্থতা বা রোগ এর পাদর্ভাব ঘটা অস্বাভাবিক নয়। প্রয়োজনে দ্রুতে সময়ের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সুস্থ থাকুন। নিজের প্রিয় সন্তানকে আগলে রাখুন আপন মমতায়। শুভকামনা।
সফলতার গল্প
আপনি কি ঢাকার সেরা বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ খুঁজছেন? ডা. মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আইভিএফ ও বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ, যার ১৩ বছরের অভিজ্ঞতা এবং ১০০টিরও বেশি সফল আইভিএফ সাফল্য রয়েছে।
গর্ভাবস্থা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের YouTube এবং Facebook পেজে ভিজিট করুন:
- YouTube: Infertility Solution by Dr. Rafiqul
- Facebook: Infertility Solution BD
সঠিক তথ্য ও দিকনির্দেশনা পেতে এবং আমাদের কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এখানে ভিজিট করুন: Google Maps